রিপোর্ট মেহেদী হাসান: নরসিংদী পৌরসভার সিএনজি ও অটোরিকশা স্ট্যান্ড ইজারা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে নানা বিভ্রান্তিকর তথ্য। “নরসিংদীর পৌর প্রশাসক ড. মো. মনোয়ার হোসেন ২৫ লাখ ২০ হাজার টাকায় ইজারা দিয়েছেন, কিন্তু টাকা কোথায় গেল—নরসিংদীবাসী জানতে চায়” — এমনটাই দাবি করে কয়েকটি ফেসবুক আইডি থেকে পোস্টটি ছড়িয়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি ভাইরাল হতেই শুরু হয় তীব্র সমালোচনা ও নানা মন্তব্যের ঝড়।
তবে যাচাই-বাছাইয়ে জানা যায়, গুজব ছড়িয়ে দেওয়া উক্ত পোস্টটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সরকারি নথি অনুযায়ী ইজারা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে নিয়মিত প্রশাসনিক পদ্ধতিতে এবং ইজারার সম্পূর্ণ অর্থ সরাসরি সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে।
নরসিংদী পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব ড. মো. মনোয়ার হোসেন বিষয়টি সম্পর্কে বলেন— “আমি উক্ত ইজারা প্রক্রিয়ার সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নই। যখন টেন্ডার অনুমোদিত হয়, তখন আমি নরসিংদীতে দায়িত্বে ছিলাম না। ইজাদার নিজেই নির্ধারিত নিয়মে সরকারি কোষাগারে টাকা জমা দিয়েছেন। বিভ্রান্তিকর পোস্ট ছড়িয়ে প্রশাসনের ভাবমূর্তি নষ্টের চেষ্টা করা হচ্ছে, যা দুঃখজনক।”
প্রশাসকের বক্তব্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই পৌরসভার অফিসিয়াল নথিতে স্পষ্ট উল্লেখ আছে— ইজারা প্রক্রিয়া ও অর্থপ্রদান উভয়ই প্রশাসনিকভাবে বৈধ ও স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
তদন্তে জানা যায়, “মিন্টু মিয়া” ও “সৈয়দ আরিফ আহমেদ” নামে দুটি ফেসবুক আইডি থেকে প্রথমে উক্ত বিভ্রান্তিকর পোস্ট প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে পৌরসভার শুভাকাঙ্ক্ষী ও স্থানীয় নাগরিকরা বিষয়টি “সাইবার বিভ্রান্তি” বলে মন্তব্য করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
এরপর “সোহান হায়দার সোনো” নামের একটি আইডি থেকে প্রতিবাদস্বরূপ একটি পাল্টা পোস্টে বলা হয়— “উক্ত ইজারার টাকা সরকারিভাবে জমা হয়েছে, মনোয়ার স্যার তখন এই দায়িত্বে ছিলেন না। তাই তাঁর নামে মিথ্যা অভিযোগ অগ্রহণযোগ্য ও বিভ্রান্তিকর।”
নরসিংদী পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে,“ইজারা সংক্রান্ত সব নথি স্বচ্ছভাবে সংরক্ষিত আছে এবং যে কেউ চাইলে তথ্য অধিকার আইনের আওতায় তা দেখতে পারবেন। বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।”
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজবের মাধ্যমে প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার ঘটনা নতুন নয়। তবে নরসিংদী পৌরসভার সিএনজি ও অটো ইজারা নিয়ে ছড়ানো এই বিভ্রান্তিকর পোস্টটি প্রশাসনের স্বচ্ছ কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা ছাড়া কিছু নয় — এমনটাই জানিয়েছেন সচেতন নাগরিক ও স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা।